| |
ভিডিও
ads for promotions
/
বাংলাদেশ থেকে মাছের আঁশ যাচ্ছে জাপান-চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে

বাংলাদেশ থেকে মাছের আঁশ যাচ্ছে জাপান-চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে

নিউজ ডেস্ক: নাগরিক আলো

প্রকাশিত: 03 February, 2024

  • 56
মাছের আঁশ সাধারণত উচ্ছিষ্ট বা বর্জ্য হিসেবে বিবেচনা করে ফেলে দেয়া হয়। তবে টাঙ্গাইলে সেই আঁশ এখন দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে শুরু করেছে, যা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে প্রতি বছর ২০০ কোটি টাকার বেশি মাছের আঁশ রফতানি করা হচ্ছে। এ জেলায় মাছের বড় বাজারগুলোসহ প্রায় সব বাজারেই বঁটিওয়ালারা পাইকারদের কাছে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে মাছের আঁশ বিক্রি করছেন।

শুধু টাঙ্গাইল নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার টন আঁশ রফতানি হয় জাপান, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোয়। প্রতি টন আঁশ ৩৫০-৪৭০ ডলারে বিক্রি হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানান, মাছের আঁশের বিশ্বব্যাপী নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। মাছের আঁশে থাকে কোলাজেন যা খাদ্য, ওষুধ, ফুড সাপ্লিমেন্ট ও কসমেটিকস শিল্পে ব্যবহার হয়। 

কোলাজেন নামক একটি পণ্য বিক্রি হয় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। চীন ও জাপানে এ আঁশ ব্যবহার করে বায়ো পাইজোইলেকট্রিক ন্যানো জেনারেটর তৈরি করা হয়, যেগুলো দ্বারা রিচার্জেবল ব্যাটারিতে চার্জ দেয়া যায়। 

ঘরোয়া বিদ্যুৎ উৎপাদনেও এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়া মাছের আঁশ ব্যাটারি তৈরি, বৈদ্যুতিক পণ্য, কৃত্রিম কর্নিয়া, মাছ ও পোলট্রি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। 

রফতানি খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২৭ হাজার ২৭৮ টন মাছের আঁশ উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ৯০ ভাগই রফতানি হয়। মূলত জাপান, হংকং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও চীনে এসব আঁশ রফতানি হয়। 

প্রতি টন আঁশ ৩৫০-৪৭০ ডলারে বিক্রি হয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশ বছরে ২০০ কোটি টাকার মাছের আঁশ রফতানি করে। এ পেশার সঙ্গে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ সরাসরি জড়িত। ১০-১২টি দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।

মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, মাছের আঁশ সংগ্রহ করার পর সেই আঁশগুলো পরিষ্কার পানিতে অথবা গরম পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়। তারপর রোদে শুকানোর পর ঝরঝরে করা হয়। 

এরপরই বিক্রির উপযোগী হয়। বছরে দুই থেকে তিনবার এ আঁশ বিক্রি করা হয় পাইকারদের কাছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকার এসে মাছের আঁশগুলো কিনে নিয়ে যায়।

 প্রতি মণ আঁশ বিক্রি করা হয় ৩৬০০ থেকে ৪০০০ টাকা করে। শুধু আঁশ নয় মাছের নাড়িভুঁড়িও বিক্রি হয়। নাড়িভুঁড়ি ব্যবহার করা হয় মাছের খাদ্য হিসেবে। 

মাছের জাত অনুযায়ী আঁশের দাম ভিন্ন হয়। রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন বড় মাছের আঁশের দাম একটু বেশি। আর ছোট মাছের আঁশের দাম আরেক রকম। শহরের বড় দুই বাজার পার্ক বাজার এবং ছয়আনি বাজার থেকে ১৫-২০ জন মাছ কাটার পাশাপাশি মাছের আঁশ বিক্রি করছেন নিয়মিত।

টাঙ্গাইল ছয়আনি মাছের বাজারে নিয়মিত মাছ কাটেন (বঁটিওয়ালা) সজীব। মাছ কাটতে প্রতি কেজিতে তিনি নেন ২০-৩০ টাকা করে। 

মাছ কাটেন বেলা ১টা পর্যন্ত। মাছের আঁশ বিক্রি করে বছরে বাড়তি আয় করছেন প্রায় ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বছর ছয়-সাত মণ মাছের আঁশ বিক্রি করছেন পাইকারদের কাছে।

একই কাজ করা মো. সোহেল নামের একজন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমি প্রায় ১৪ বছর ধরে মাছের ব্যবসা করি। আর মাছের আঁশ বিক্রি করি প্রায় সাত বছর ধরে। বছরে দুই-তিনবার মাছের আঁশ বেচা যায়।’

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক মো. হারুন-অর রশীদ, যিনি মাছের আঁশ থেকে বিভিন্ন খাদ্য উপাদান তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন নিয়ে পিএইচডির গবেষণা করছেন। 

তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে মাছের আঁশ থেকে বিভিন্ন উপাদান তৈরির সুযোগ রয়েছে, যার মাধ্যমে পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব না ফেলেও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে। 

কিন্তু এর মূল অন্তরায় হচ্ছে প্রযুক্তির অপ্রতুলতা বা প্রযুক্তি উদ্ভাবনের গবেষণার অভাব, বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান সৃষ্টির জন্য সহযোগিতার অভাব সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এ সেক্টরে বিনিয়োগের সংস্কৃতি তৈরি না হওয়া।’

টাঙ্গাইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘মাছের আঁশের নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। জিন্স প্যান্ট, গ্যাভার্ডিন কাপড়ের ওপর এক ধরনের আঠার প্রলেপ দেয়া হয়, যার ফলে কাপড়ের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। 

ক্যাপসুলের খোসা ও প্রসাধন সামগ্রী তৈরিতেও মাছের আঁশ ব্যবহার করা হয়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ আঁশ নিয়ে বিভিন্ন সময় গবেষণা করে সফল হয়েছে।’


Share On:

0 Comments

No Comment Yet

Leave A Reply

Nagorik Alo is committed to publish an authentic, Informative, Investigate and fearless journalism with country’s people. A highly qualified and well knowledged young team of journalists always fetch real news of the incidents or contemporary events. Providing correct news to the country's people is one kinds of community service, Keeping this in mind, it always publish real news of events. Likewise, Nagorik Alo also promised to serve the Bangladeshi people who reside in out of the country.

সম্পাদক : মোঃ ইলিয়াস হোসেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আরিফুর রহমান info@nagorikalo.com যোগাযোগ : 30/A, সাত্তার সেন্টার ( হোটেল ভিক্টরি) লেভেল 9, নয়া পল্টন, ঢাকা--১০০০ +8801753634332

© ২০২৩ nagorikalo.com