জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটযুদ্ধে জয়লাভকারী প্রার্থীদের অনেকেরই বস্ত্র ও তৈরি পোশাক শিল্পের বড় ব্যবসায়ী হিসেবে আলাদা পরিচিতি রয়েছে।
তাদের কেউ আওয়ামী লীগের, কেউ জাতীয় পার্টির এবং কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় থাকা খাতটির যেসব উদ্যোক্তা গতকালের ভোটযুদ্ধে জয় পেয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন
সেপাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা টিপু মুনশি, রেনেসাঁ ও ইন্টারস্টফ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, উদ্যোক্তা মো. শাহরিয়ার আলম, হা-মীম গ্রুপের কর্ণধার এ কে আজাদ, ওয়েল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আবদুচ ছালাম, মন্ডল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মমিন মন্ডল,
এনভয় গ্রুপের কর্ণধার সালাম মুর্শেদী, নিপা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিজিএমইএ পরিচালক মোহাম্মদ খসরু চৌধুরী প্রমুখ।
বাণিজ্যমন্ত্রী ও সেপাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু মুনশি রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। ৪৬ হাজার ৪৭২ ভোট পেয়ে তিনি বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল পেয়েছেন ১৫ হাজার ৬৩১ ভোট।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রেনেসাঁ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মো. শাহরিয়ার আলম রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে নৌকা প্রতীকে জয় পেয়েছেন। বেসরকারি ফলাফলে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৮২৭ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক পেয়েছেন ৭৩ হাজার ৬৫১ ভোট।
এবারের নির্বাচনে বস্ত্র ও পোশাক খাতের যেসব ব্যবসায়ী সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হা-মীম গ্রুপের কর্ণধার এ কে আজাদ।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া বেসরকারি ফলাফল অনুসারে, ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় ৫৯ হাজার ৯ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক এ প্রেসিডেন্ট ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামীম হক পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৮৯ ভোট।
নিপা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিজিএমইএর পরিচালক মোহাম্মদ খসরু চৌধুরী ঢাকা-১৮ আসনে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলে বিজয়ী হয়েছেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ খসরু চৌধুরী এবার কেটলি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
তিনি পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৮৩১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের এসএম তোফাজ্জল হোসেন ৩৭ হাজার ৭৫৯ ভোট পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আবদুচ ছালাম। দেশের নেতৃস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী ওয়েল গ্রুপের এ প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ৭৮ হাজার ২৬৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরী (ফুলকপি) পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫০০ ভোট।
শাশা ডেনিমসের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবার চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে নির্বাচন করেছিলেন আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে।
লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬ হাজার ৫৬২ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী কেটলি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৬২ ভোট।
পোশাক পণ্যের প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এবং এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম মুর্শেদী খুলনা-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনিও জয় পেয়েছেন।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রেসিডেন্ট ও উইসডম অ্যাটায়ারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
রফতানিমুখী তৈরি পোশাক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মন্ডল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মমিন মন্ডল সিরাজগঞ্জ-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছেন।
৭৭ হাজার ৪২২টি ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস পেয়েছেন ৭৩ হাজার ১৮৩টি ভোট।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply