সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জাহাজ এমবি আব্দুল্লাহর নাবিক আনোয়ারুল হক রাজু জানিয়েছেন, রাতে আমরা বিজে ঘুমাতাম। যখন কোনো নেভি শিপ যেত তখন জলদস্যুরা আরও সতর্ক হয়ে যেত। তখন তারা স্পেশালি আমাদের দিকে অস্ত্র তাক করে রাখতো। যার কারণে নেভি শিপ গেলে আমাদের আরও সমস্যা হতো। ট্রিগার টেনে অস্ত্র আমাদের দিকে তাক করে রাখত। সব চেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে ঘুম থেকে উঠে চোখ খুললেই দেখতাম অস্ত্র আমার দিকে তাক করা।
বুধবার দুপুরে তিনি একথা জানান। সুস্থভাবে বাড়িতে ফিরতে পেরে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছেন রাজু। রাজু নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের আজিজুল হক মাস্টারের ছেলে।
জিম্মি থাকা ৩৩ দিনের স্মৃতিচারণ করে রাজু বলেন, শেষ যখন ওরা জানছে আমরা মুসলিম ছিলাম, তখন আমরা কিছুটা ছাড় পেয়েছি। মুসলিম হিসেবে ঈদের দিন ওরা আমাদের ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ার সুযোগ দিয়েছে। ঈদের দিন জলদস্যুরা আমাদের ইঙ্গিত দেয় দুই এক দিনের মধ্যে আমাদের মুক্তিপণ আসবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে রাজু বলেন, মুক্তিপণ কত দিয়েছিল এটা শুধু কোম্পানি আর বাংলাদেশ সরকার জানে। এছাড়া আর কেউ জানে না। তবে আমরা বড় বড় তিনটি ব্যাগ ওপর থেকে জাহাজে পড়তে দেখেছি।
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের নাবিক রাজু প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পর মঙ্গলবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফিরেন। ওই সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সাড়ে পাঁচ মাসের বেশি সময় পর রাজুকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা-বাবা।
ছেলের ফিরে আসার দিনক্ষণ আগেই জানা ছিল মা-বাবার। রাজুর বন্ধুরা চট্টগ্রাম থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ সময় ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে নেন মা-বাবাসহ স্বজনরা। এতে অবসান ঘটে এক দীর্ঘ উৎকণ্ঠার।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply