‘কারও পানি লাগবে ভাই, পানি?’ পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার আগে এটাই ছিল মীর মুগ্ধের শেষ কথা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের মাঝে এভাবেই পানি বিতরণ করেছেন। তিনি চলে গেছেন, কিন্তু তার রেখে যাওয়া একটি বাক্য মনে পড়লেই গা শিউরে ওঠে সবার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের পানি বিতরণ করার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। এবার তাকে নিয়ে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ একজন বাংলাদেশের হৃদয়’ শিরোনামে স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন সুজন আহমেদ।
শিগগিরই মুক্তি পাবে প্রামাণ্যচিত্রটি। এটি প্রযোজনা করেছেন সৈয়দ আশিক রহমান। মূলত কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিক্ষোভ, গণহত্যা, গণপ্রতিরোধ ও গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকার পতনের প্রেক্ষাপট এবং দেশের জন্য মীর মুগ্ধের অবদানই তুলে ধরা হয়েছে এই প্রামাণ্যচিত্রে।
গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তরার আজমপুরে সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মীর মুগ্ধ। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনলাসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
মীর মুগ্ধ শুধু পড়াশোনাই নয়, ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়ায় টপ পজিশনে ছিলেন। এর বাইরে একজন ভ্রমণপিপাসু, ভালো ফুটবলার, বাংলাদেশ স্কাউটের সদস্য এবং সত্যিকারের মানবতাবাদী একজন মানুষ ছিলেন। পাশাপাশি সুযোগ পেলেই সামাজিক কর্মকাণ্ডে সময় দিতেন তিনি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে গণিতে স্নাতক পাসের পর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এ এমবিএ করছিলেন মীর মুগ্ধ। মৃত্যুর সময় তার গলায় রক্তমাখা বিইউপির আইডি কার্ড ছিল।
তার বাবার নাম মীর মোস্তাফিজুর রহমান, মায়ের নাম শাহানা চৌধুরী। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ছিলেন যমজ।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply