সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলেও বয়ে চলেছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পুরোদমে জেঁকে বসেছে শীত। দিনভর কনকনে শীতের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) টাঙ্গাইলের তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক। সপ্তাহ জুড়ে জেলায় শীতের এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে।
তবে মধ্যবেলায় কখনো কখনো সূর্যের দেখা মিললেও তাপমাত্রার পরিবর্তন হচ্ছে না। দিন-রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শীতার্ত মানুষেরা। বিকেল থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে পরদিন সকাল পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকছে। শীতের কারণে ছিন্নমূল ও দিনমজুররা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। ঘন কুয়াশা, তীব্র শীত ও হিমশীতল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার সাধারণ মানুষের জীবন।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘন কুয়াশা এবং দিনভর উত্তর-পশ্চিম থেকে বয়ে আসা পাহাড়ি হিমেল হাওয়ায় সাধারণ মানুষ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তীব্র শীতে জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। তবে পরিবারের চাহিদা মেটাতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা শীত উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে ছুটছেন।
অপরদিকে তীব্র শীতে অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়েছে ব্যস্ততম সড়ক ও হাটবাজারগুলো। ভোরে ঘনকুয়াশা থাকার কারণে বিভিন্ন সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
টাঙ্গাইল শহরের অটোচালক আমির হামজা, জয়নাল, জাকির হোসেন ও আব্দুল কদ্দুস বলেন, কনকনে শীতের কারণে অনেকেই বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। তবে যে হারে ঠান্ডা বাতাস তাতে সবার চলাচল করতে খুব সমস্যা হচ্ছে।
এদিকে শীতের কারণে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শীত বাড়ায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে শিশুই বেশি। শিশু-বয়স্কদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এসব রোগ থেকে রেহাই পেতে গরম কাপড় ব্যবহার, যতটা সম্ভব ঠান্ডা এড়িয়ে চলা জরুরি। শিশুদের ঠান্ডা ও ধুলোবালি থেকে যতটা সম্ভব দুরে রাখতে হবে। শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে শিশুদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। ঘরে ঠান্ডা হাওয়া যেন না প্রবেশ করে সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে অভিভাবকদের।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইলে তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামায় জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক উভয় কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাপমাত্রা বাড়লে যথারীতি ক্লাস চলবে। সরকারের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শিশুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply