ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ। আদানিসহ ভারতের সরকারি-বেসরকারি পাঁচটি কোম্পানির আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। অন্য ভারতীয় কোম্পানিগুলোর গড় দামের তুলনায় আদানির বিদ্যুতের দাম ৮০ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। বিপিডিবির ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ভারতের যে পাঁচটি কোম্পানি থেকে বিপিডিবি বিদ্যুৎ আমদানি করে, সেগুলো হলো এনভিভিএন লিমিটেড, পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন অব ইন্ডিয়া, পিটিসি ইন্ডিয়া লিমিটেড, সেম্বকর্প এনার্জি ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং আদানি গ্রুপের আদানি পাওয়ার।
বিপিডিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, আদানি ছাড়া ভারতের অন্যান্য কোম্পানি থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে খরচ পড়েছে ৪ দশমিক ২২ থেকে ৯ দশমিক ৯৫ টাকা।
সেখানে আদানির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য বাংলাদেশকে গুনতে হয়েছে ১৪ দশমিক শূন্য ২ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকার ভারতের আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বিদ্যুৎ আমদানি বাবদ ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি পরিশোধ করেছে।
তার মধ্যে দুটি কেন্দ্র থেকে কোনো বিদ্যুৎ না নিয়েও পরিশোধ করা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকার বেশি। বাকি ছয়টি কেন্দ্র থেকে গত অর্থবছরে বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত থেকে আমদানি করা সব বিদ্যুতের দাম বেড়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ আমদানি করতে গড়ে ব্যয় হয়েছিল ৬ দশমিক ১১ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে খরচ হয়েছে ৮ দশমিক ৭৭ টাকা। অর্থাৎ দাম বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৫৩ শতাংশের বেশি।
প্রতিবেদনমতে, ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার এনভিভিএন লিমিটেড ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশে ১৮০ কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ৪২৮ কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
অন্যদিকে ঝাড়খন্ডে আদানি পাওয়ার লিমিটেড থেকে কেনা হয় ১৫৯ কোটি ৮১ লাখ ৫৬ হাজার ৮২২ কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ।
এনভিভিএন লিমিটেডের তুলনায় আদানি গ্রুপ ২০ কোটি ৩৫ লাখ ৭৮ হাজার ৬০৬ কিলোওয়াট ঘণ্টা কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
এনভিভিএন লিমিটেডকে পরিশোধ করা হয়েছে ৭৬০ কোটি ৬৩ লাখ ৫৫ হাজার ৩৬২ টাকা।
অথচ কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা আদানিকে পরিশোধ করা হয়েছে ২ হাজার ২৪১ কোটি ৪১ লাখ ১৭ হাজার ৩০৮ টাকা।
এ ব্যাপারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভারতের সঙ্গে প্রথম দিকে বিদ্যুৎ আমদানি করার যে চুক্তি করা হয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশ লাভবান হয়েছিল।
আদানির সঙ্গে করা চুক্তিটিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত হয়নি; যার মাশুল এখন বাংলাদেশকে দিতে হচ্ছে।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply