সাভারের আমিনবাজারে ভাঙা ব্রিজ এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ইটভাটার মালিক ও শ্রমিকেরা। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুই ঘণ্টা পর পুলিশের ধাওয়ায় সড়ক ছেড়ে দেন তারা।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা জানান, সাভারের বিভিন্ন ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা, চিমনি গুঁড়িয়ে দেওয়াসহ ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। ইটভাটা চালুসহ অভিযান বন্ধের দাবিতে আজ বুধবার সকাল ১০টার মহাসড়কের অবস্থান নেন তারা। পরে তারা মহাসড়কের উভয় পাশ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের উভয় পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় যানজটে আটকা পড়েন বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীরা। অনেকে বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা দেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। হ্যান্ড মাইক দিয়ে শ্রমিকেরা বলেন, 'ইট ভাটা চলবে, গাড়ির চাকা ঘুরবে।'
বিক্ষোভকারী শ্রমিক সফিউল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা ছয় মাস ইটভাটায় কাজ করি বাকি ছয় মাস বাড়িতে কাজ করি। ভাটা বন্ধ করলে খাব কী? আমরা আজ সড়ক অবরোধ করেছি। ইটভাটা চালুর অনুমতি না দিলে আমরা সড়ক থেকে সরব না।
এবিএম ব্রিকসের মালিক মো. জাহাঙ্গীর বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ঢালাওভাবে ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের অন্তত ছয় মাস সময় দেওয়া হোক। আমাদের সময় না দিলে হাজার হাজার শ্রমিক না খেয়ে মারা যাবেন। আমরা সে জন্য সড়কে নেমে এসেছি আমাদের দাবি মানা হোক। দাবি না মানলে আমরা পরবর্তীতে আবারও রাস্তায় নামব।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছালেহ আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ইটভাটা চালু রাখারা দাবিতে বিভিন্ন ইটভাটার মালিক-শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। আমরা তাদের সড়ক থেকে সরে যাওয়ায় অনুরোধ জানাই। তারা সড়ক থেকে না সরলে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়। তারা ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।
সাভার উপজেলাকে 'ডিগ্রেডেড এয়ারশেড' ঘোষণা করে গত ১৭ আগস্ট পরিবেশ অধিদপ্তর এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে। পরিপত্র অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকে সাভার উপজেলার অন্তর্গত সব ধরনের ইটভাটায় (টানেল ও হাইব্রিড হফম্যান কিলন ছাড়া) ইট পোড়ানোসহ ইট প্রস্তুতের কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ করা হয়।
ওই সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছিল, সাভার উপজেলায় ১০৭টি ইটভাটা আছে। এর মধ্যে মাত্র দুটি ইটভাটায় পরিবেশবান্ধব উপায়ে ইট তৈরি করা হয়। মূলত পরিপত্র জারির পর সেপ্টেম্বর থেকে ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক ইলিয়াস আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সাভারকে ডিগ্রেডেড এয়ারশেড ঘোষণার পর থেকে আমরা নিয়মিত ইটভাটাগুলোতে অভিযান পরিচালনা করছি। শুধু ইটভাটা নয়, পরিবেশের ক্ষতি করে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান সাভার এলাকায় পরিচালনা করতে পারবে না, এ লক্ষ্যে কাজ করছি।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply