| |
ভিডিও
ads for promotions
/
বিএনপি সেনা ছাউনিতে জন্ম হওয়া দল নয় : রিজভী

বিএনপি সেনা ছাউনিতে জন্ম হওয়া দল নয় : রিজভী

নিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 11 January, 2025

  • 25
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ শনিবার রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি সেনা ছাউনিতে জন্ম হওয়া কোনো দল নয়। সামরিক প্রশাসক কিংবা সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে নয়, বরং ঢাকার রমনা রেস্তোরাঁয় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন বিএনপি গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন তিনি ছিলেন দেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। এসব তথ্য জানার পরও বিএনপি সম্পর্কে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তারা গভীর চক্রান্তে নিয়োজিত রয়েছে

আজ শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশের জনগণের ভালোবাসায় ধন্য বিএনপির বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকেও বিএনপি সম্পর্কে ভুল তথ্য সন্নিবেশিত করা হচ্ছে। আমরা রাজনীতি সচেতন দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, বিএনপি সেনা ছাউনিতে জন্ম হওয়া কোনো দল নয়। সামরিক প্রশাসক কিংবা সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে নয়, বরং ঢাকার রমনা রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে ১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন বিএনপি গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন তিনি ছিলেন দেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।’

রিজভী বলেন, ‘বিএনপি সেনা ছাউনিতে গঠিত হয়েছে—এই তথ্য ইতিহাস বিকৃতি ছাড়া কিছুই নয়। পাঠ্য বইয়ে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিব ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। গঠন করেছিলেন একদলীয় বাকশাল। এরপর ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসের পট পরিবর্তনের পর দেশে সামরিক শাসন জারি করে খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। এ সময় দেশে কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। এমনকি, একদলীয় অভিশপ্ত বাকশালের নাম নেওয়ারও কেউ ছিল না। দেশের এমন পরিস্থিতিতে জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। জারি করেন ‘রাজনৈতিক দলবিধি ১৯৭৬’। রাজনৈতিক দলবিধির আওতায় কয়েক ডজন রাজনৈতিক দল স্বনামে রাজনীতি করার অনুমতি চেয়ে জিয়াউর রহমানের কাছে আবেদন করে। ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগসহ কমপক্ষে ১৯টি রাজনৈতিক দলকে দেশে স্বনামে রাজনীতি করার অনুমতি দেয়। শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা। এসব তথ্যপ্রমাণে স্পষ্ট, জিয়াউর রহমান আগে নিজে দল গঠন করেননি, বরং অন্য সব দলকে দেশে স্বনামে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে, দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে যখন বিএনপি গঠনের ঘোষণা দেন, তখন তিনি আর সেনাপ্রধান নন, বরং তিনি ছিলেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। এসব তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করলে এটি স্পষ্ট, বিএনপি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে ক্ষমতা নয়, বরং দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। এসব সত্য ইতিহাস কেন এখন পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবেশিত হবে না? এসব তথ্য জানার পর বিএনপি সম্পর্কে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তারা গভীর চক্রান্তে নিয়োজিত রয়েছে।’

বিএনপিনেতা রিজভী বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরের শাসনামলে দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতির সবকিছুতেই শুধু শেখ মুজিবময় মাফিয়া আওয়ামী সরকার। দেশের সব পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃত করে পাতায় পাতায় স্থান দেওয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগের গুণগান, শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনাসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লেখা গল্প-প্রবন্ধ ও ছবি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঠ্যবই থেকে দলীয় গুণগান বাদ দিয়ে সংশোধন ও পরিমার্জন করার উদ্যোগ নিলেও হাসিনার দোসররা তাদের অশুভ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে মত্ত রয়েছে।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজ একটি গণহত্যাকারী, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিত। তারা মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়েছে এবং ১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার হরণ করেছে। গুম-খুন, হামলা-মামলা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বাকস্বাধীনতা হরণ করে গণশত্রু এই দলটি জনবিচ্ছিন্ন ও গণবিদ্বেষী অপশক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাদের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচয় দেওয়া গণতন্ত্রকামী মানুষের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি এবং দুই হাজার ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ, দুই সহস্রাধিক আহত ও পঙুত্বের মাধ্যমে পাওয়া নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।’

রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, প্রথম সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রনায়ক এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বিএনপিকে বিতর্কিত মন্তব্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করা স্বাধীন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও ঐতিহাসিক বাস্তবতার বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার। আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়েছে। একটি সংগঠন যার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ইতোমধ্যেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, সেই সংগঠনের মূল দলকে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে উপস্থাপন করা চরম মিথ্যাচার এবং শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার একটি ষড়যন্ত্র। আমরা সংশ্লিষ্ট মহলকে আহ্বান জানাই, দ্রুত পাঠ্যবই সংশোধন করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে ইতিহাসের নিরপেক্ষ ও সঠিক তথ্য তুলে ধরতে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মনে রাখতে হবে গত ১৬ বছরের ত্যাগ-সংগ্রামে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ রক্ত দিয়েছেন এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে, যেখানে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে এবং ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার পরাজিত হবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান এই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে প্রতিটি উদ্যোগকে সফল করে তোলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ভেতরে-বাইরেসহ সব পর্যায় থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।



Share On:

0 Comments

No Comment Yet

Leave A Reply

Nagorik Alo is committed to publish an authentic, Informative, Investigate and fearless journalism with country’s people. A highly qualified and well knowledged young team of journalists always fetch real news of the incidents or contemporary events. Providing correct news to the country's people is one kinds of community service, Keeping this in mind, it always publish real news of events. Likewise, Nagorik Alo also promised to serve the Bangladeshi people who reside in out of the country.

সম্পাদক : মোঃ ইলিয়াস হোসেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আরিফুর রহমান info@nagorikalo.com যোগাযোগ : 30/A, সাত্তার সেন্টার ( হোটেল ভিক্টরি) লেভেল 9, নয়া পল্টন, ঢাকা--১০০০ +8801753634332

© ২০২৩ nagorikalo.com