রিমালের প্রভাবে খেপুপাড়া ও পটুয়াখালীতে বৃষ্টি হয়েছে ১১১ মিলিমিটার, ঢাকায় সকাল ৬টা পর্যন্ত ৫৯ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ২০৩ মিলিমিটার ও কুতুবদিয়ায় ১২৫ মিলিমিটার। এ ছাড়া সারা দেশেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা আজ সারা দিন অব্যাহত থাকবে।
উপকূলে ঝড়, বৃষ্টি, জোয়ার আর জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডব চালিয়ে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্রভাগ দুপুরের পর ঢাকায় ঢুকবে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার আর বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য দেন।
আজিজুর রহমান বলেন, রিমালের কেন্দ্রভাগ বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ঢাকার দিকে আসবে। এটি এখন অনেকটা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। এর ফলে ঢাকায় আরও বৃষ্টি হবে। সেই সঙ্গে ঝোড়ো বাতাস বইবে। ঢাকার ওপর দিয়ে এটা পর্যায়ক্রমে সিলেট হয়ে বাংলাদেশের বাইরে যাবে ৷ ঢাকায় এলে বৃষ্টিপাত আর দমকা বাতাস কিছুটা বাড়বে।
আজিজুর রহমান বলেন, রিমাল সারা রাত তাণ্ডব চালিয়েছে। এর অগ্রভাগ দুপুরে উপকূলে আসে। মধ্যরাতে কেন্দ্র ওপরে উঠে আসে। এরপর পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা ধরে পুরোটা ওপরে উঠে আসে। ৬টার আগেই উপকূলে উঠে আসে। এখন সাইক্লোন থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাব যশোরে আছে, এরপর ঢাকায় আসবে। বাতাস ২০ থেকে ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে। এর চেয়ে আর বাড়ার সুযোগ নেই। এটি উপকূলের পুরোটা অংশ পেয়েছে। কক্সবাজারের কয়েকটা এলাকা পানিতে ডুবে গেছে।
রিমাল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে জানিয়ে আজিজুর রহমান বলেন, রিমাল এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে ঘূর্ণিঝড় এবং সবশেষে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে যশোর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এটি আগামীকালের মধ্যে আরও দুর্বল হয়ে বৃষ্টি দিয়ে একই দিক দিয়ে নিম্নচাপ আকারে আসামের দিকে চলে যাবে।
আজিজুর রহমান বলেন, রিমাল গতকাল সন্ধ্যার দিকে উপকূলের মোংলা ও ভারতীয় সাগর আইল্যান্ড দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম শুরু করে ৷ এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি ছিল পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়।
পরিচালক জানান, ঝড়ে সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ ছিল পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১১১ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। রাত ১টা ৩০ মিনিটে এটা রেকর্ড করা হয়েছে। আর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে ২০৩ মিলিমিটার।
কোথায় কত ছিল গতিবেগ
রাত ১টা ৩০ মিনিটে খেপুপাড়ায় ১১১ কিলোমিটার, রাত ১১টায় ১০২ কিলোমিটার, রাত সাড়ে ৮টায় ৬৫ কিলোমিটার, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ৬১ কিলোমিটার ও বিকেল ৪টায় ৫৪ কিলোমিটার ছিল খেপুপাড়ায়।
পটুয়াখালী জেলায় রাত দেড়টায় ছিল ১১১ কিলোমিটার, রাত সাড়ে ১১টায় ছিল ১০২ কিলোমিটার, রাত ২টায় ৮৯ কিলোমিটার এবং রাত ৩টায় ছিল ৫৮ কিলোমিটার।
আজিজুর রহমান বলেন, বাতাসের গতিবেগ দেখে বোঝা যাচ্ছে রিমাল পটুয়াখালী ও খেপুপাড়া অঞ্চলে বেশি সময় স্থায়ী ছিল। এটির বড় অংশ এই অঞ্চল দিয়ে পার হয়েছে।
এ ছাড়া সাতক্ষীরায় রাত ২টায় বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড করা হয় সর্বোচ্চ ৭৮ কিলোমিটার। মোংলায় রাত সাড়ে ১২টায় ৮০ কিলোমিটার ও রাত ১১টায় ৮৩ কিলোমিটার। ঢাকায় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয় ৬৯ কিলোমিটার। আর চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ৭৪ কিলোমিটার।
রিমালের প্রভাবে খেপুপাড়া ও পটুয়াখালীতে বৃষ্টি হয়েছে ১১১ মিলিমিটার, ঢাকায় সকাল ৬টা পর্যন্ত ৫৯ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ২০৩ মিলিমিটার ও কুতুবদিয়ায় ১২৫ মিলিমিটার। এছাড়া সারা দেশেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা আজ সারা দিন অব্যাহত থাকবে।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply