যশোরের চৌগাছায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে নির্মিত সড়কে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায় সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জেআরআরআইডিপি প্রকল্পের অধীনে উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের স্বরুপদাহ গ্রামের আহমদ হাজীর বাড়ি থেকে মাধবপুর বাওড় সড়কের সাতশো পাঁচ মিটার সড়ক পাকা করা হয়। সড়কটির আইডি নং ২৪১১১৫১৮৯। সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৬১ লাখ ৯৬০ টাকা। সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লক্ষিপাশা এলাকার মেসার্স নুর কনসট্রাকশন।
টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সড়কটিতে যে মান অনুযায়ী কাজ করার কথা ছিল তা করা হয়নি। নিম্নমানের ইট খোয়া ও বালি ব্যবহার করে যেনতেনভাবে ম্যাকাডাম করা হয়েছে। এরপরও সর্বশেষ সড়কটিতে কার্পেটিং এর পুরুত্ব থাকার কথা ছিল ২৫ মিলিমিটার এবং সিলকোডের পুরুত্ব থাকার কথা ছিল ৭ মিলিমিটার দুটো মিলিয়ে ৩২ মিলিমিটার। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্পেটিং ও সিলকোড মিলিয়ে করেছে মাত্র ২০ মিলিমিটার। অর্থাৎ ১২ মিলিমিটার এখানেই কম পুরুত্ব করা হয়েছে সে কারণে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সড়কে ব্যাপক দুর্নীতির খবর পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে তদন্তে আসে। দুর্নীতির সত্যতা পেলেও অজ্ঞাত কারণে এখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এব্যাপারে জানতে চাইলে যশোর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (জেআরআরআইডিপি) পরিচালক প্রকৌশলী এসএম কবির বলেন, ‘এধরনের কোন অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’চৌগাছা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী রিয়াসাত ইমতিয়াজ বলেন, ‘ঠিকাদার কাজটি পুনরায় করে দিবেন,তার বিল বন্ধ রাখা হয়েছে।’
অবশ্য সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে এ সড়কটি প্রায় চার মাস পূর্বে করা ঠিকাদার তার বিল তুলে নিয়েছেন। সড়কটি নির্মাণ করার সময় সার্বক্ষণিক দেখভাল করেন চৌগাছা অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাক আলী মোর্তজা। তার উপস্থিতিতে এমন কাজ কিভাবে হলো জানতে চাইলে, তিনি বলেন ঠিকাদার কাজটি পুনরায় করে দিবে। কাজের সময় তিনি সাইডে না থেকে কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে তার কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঠিকাদার বলেন, ‘চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী রিয়াসত ইমতিয়াজ বিগত সরকারের আমলে নিজেকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে লাখ লাখ অবৈধ টাকা কামাই করেছেন। যার ফলে চৌগাছা উপজেলার কোন সড়ক মান অনুযায়ী নির্মিত বা সংস্কার হয়নি।
চৌগাছা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, এ উপজেলার যে কাজে হাত দিবেন সেখানেই দুর্নীতির গন্ধ পাবেন।’
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply