মেহেরপুরের গাংনীর বেতবাড়িয়ায় মাথাভাঙ্গা নদীর ওপরের একটি সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ১ বছর আগে। তবে এখনো চালু হয়নি সেতুটি। সংযোগ সড়ক না হওয়ার কারণে সেতুটি ব্যবহার করতে পারছেন গাংনী ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর—এই দুই উপজেলার মানুষ। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফয়সাল হোসেন জানিয়েছেন, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় গাংনী অংশের রাস্তা তৈরি সম্ভব না হওয়ায় সেতুটি চালু করা সম্ভব হয়নি।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে গাংনী বেতবাড়িয়ার মাথাভাঙ্গা নদীর মধুগাড়ী ঘাট এলাকায় গার্ডার সেতুটি নির্মাণ করে এলজিইডি। সেতুটির অপর পাশে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা। সেখানে সংযোগ সড়ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতু নির্মাণের এক বছর পরও গাংনী অংশের সংযোগ সড়ক তৈরি করতে না পারায় সেতুটি ব্যবহার করতে পারছে না দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এতে ৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে গাংনী ও দৌলতপুর উপজেলার বাসিন্দাদের। এই উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় আসতে গিয়ে বাড়তি খরচ হওয়ার পাশাপাশি এ অঞ্চলের কৃষক, ব্যবসায়ী শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। শর্টকাটে যেতে চাইলে কৃষকদের পায়ে হেঁটে মাথায় খেতের ফসল নিয়ে অনেক কষ্ট করে সেতুতে উঠতে হচ্ছে। তা ছাড়া মোটরসাইকেল, ভ্যান ও বাইসাইকেল কয়েকজন মিলে ঠেলে সেতুতে উঠলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় বাস ট্রাকসহ বড় ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে এই এলাকার রোগীদেরও চিকিৎসা সেবা নিতে ঘুর পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
স্থনীয় কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, মাথায় করে ফসল নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। কবে যে কাজ শেষ হবে আর এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাব।
কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও বেতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সাইদুর রহমান বলেন, দৌলতপুর অংশে রাস্তা হয়েছে। গাংনী অংশে সামান্য রাস্তা না হওয়ায় সেতুটি কোনো কাজেই লাগছে না। এ অঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকার কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু তৈরি করলেও যাতায়াত করা যাচ্ছে না। রাস্তাটি নির্মাণ করা হলে চলাচলে সুবিধা হবে। সমস্যা সমাধান করে দ্রুত সেতুটি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
পথচারী মো. ইমরান হোসেন বলেন, সামান্য রাস্তা না থাকায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে গাংনী কিংবা দৌলতপুর যেতে হয়। সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করলেও সেতুটি পড়ে রয়েছে।
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফয়সাল হোসেন বলেন, ব্রিজটির কাজ গত বছরের মে মাসে শেষ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ আটকে আছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের যে ফান্ড সেখান থেকে এখনো অ্যাপ্রুভ দেয়নি। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। আশা করছি খুব দ্রুত অনুমোদন পাব।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply