একীভূত হওয়া পদ্মা ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালিত হবে এক্সিম ব্যাংক নামেই। পদ্মা ব্যাংকের সব গ্রাহক হয়ে যাবেন এক্সিম ব্যাংকের গ্রাহক। পদ্মা ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবে এক্সিম ব্যাংক। কোনো কর্মীর চাকরি যাবে না। দুর্দশাগ্রস্ত পদ্মা ব্যাংক একীভূত করতে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে গতকাল সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে এক অনুষ্ঠানে দুই ব্যাংকের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়। গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন ও পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান চুক্তিতে সই করেন। এ সময় এক্সিম ব্যাংক ও বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিমসহ তিন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
চুক্তি স্বাক্ষর শেষে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, আমরা এক্সিম ব্যাংক এগিয়ে এসেছি পদ্মা ব্যাংক টেকওভার করতে। আমরা একত্রিত হয়েছি মার্জার করতে, একুইজিশন নয়। পদ্মা ব্যাংক সম্পর্ণূরূপে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে মিলিত হয়ে গেছে। পদ্মা ব্যাংকের আর অস্তিত্ব থাকল না। পদ্মা ব্যাংকের সব দায়দেনা এক্সিম ব্যাংক পরিশোধ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক পরস্পরের সমঝোতার ভিত্তিতে একীভূত হতে চুক্তি করল। এখন তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করবে মার্জার করতে। এরপর নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান দিয়ে আমরা অডিট করব, দায়দেনা ঠিক করা হবে। স্টক এক্সচেঞ্জ ও নিবন্ধকের কার্যালয়ের (আরজেএসসি) আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে মার্জার প্রক্রিয়া শেষ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সহযোগিতা করবে বলে মুখপাত্র জানান। এ প্রক্রিয়ায় কত সময় লাগবে তা নির্দিষ্ট না করে মেজবাউল হক বলেন, দুই ব্যাংক আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার পর নতুনভাবে কার্যক্রম চালাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক যেদিন অনুমোদন দেবে, সেদিন থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে মার্জার কার্যকর হবে। পদ্মা ব্যাংকের খেলাপি ও অনিয়ম-জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মুখপাত্র জানান, খেলাপিদের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অন্যায় যে করেছে শাস্তি তাকে পেতেই হবে। জানা গেছে, পুরো একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে কয়েক মাস। তখন আর পদ্মা ব্যাংকের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। একীভূত ব্যাংকটি এক্সিম ব্যাংক নামেই পরিচালিত হবে। পদ্মা ব্যাংকের সব গ্রাহক হয়ে যাবেন এক্সিম ব্যাংকের গ্রাহক। এক্সিম ব্যাংক এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, একীভূতকরণের ফলে প্রাথমিকভাবে পদ্মা ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার চাকরি যাবে না। তবে পদ্মার কোনো পরিচালক এক্সিম ব্যাংকের পর্ষদে থাকছেন না। গত বৃহস্পতিবার পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়। একই দিন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদও।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply