শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বেসরকারি স্কুল ও কলেজের জন্য জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা–২০২৫ প্রকাশ করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, সহকারী শিক্ষকরা ১০ বছর চাকরির পর সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পাবেন, তবে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানের শিক্ষকদের জন্য ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে।
নীতিমালা অনুসারে, এমপিওভুক্ত সহকারী শিক্ষকরা নিয়োগের সময় নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করলে এবং ১০ম গ্রেডে টানা ১০ বছরের চাকরি সম্পন্ন করলে ‘সিনিয়র শিক্ষক’ হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য হবেন। এই নতুন পদোন্নতির মাধ্যমে শিক্ষকরা বেতন ও মর্যাদায় উন্নত অবস্থানে যেতে পারবেন।
তবে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষকরা এই পদোন্নতির সুযোগ পাবেন না। তারা কেবলমাত্র উচ্চতর গ্রেডের আর্থিক সুবিধা পাবেন, কিন্তু ‘সিনিয়র শিক্ষক’ পদে উন্নীত হবেন না। গ্রন্থাগার শিক্ষকদের জন্য ১০ম গ্রেডে ১০ বছর অভিজ্ঞতা এবং পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড (গ্রেড-৯, বেতন ২২,০০০–৫৩,০৬০) প্রযোজ্য থাকবে।
নীতিমালার ৭.১ ধারায় শিক্ষক ও প্রদর্শকের চাহিদা প্রেরণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধান প্রথমে শূন্য পদ বা অনুমোদিত শাখার প্রেক্ষিতে চাহিদাপত্র উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠাবেন। উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার যাচাই-বাছাই করে তা জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠাবেন। জেলা শিক্ষা অফিসার চাহিদাগুলো একীভূত করে এনটিআরসিএ বা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাবেন।
যদি কোনো প্রতিষ্ঠান ভুল চাহিদা পাঠায়, তাহলে প্রতিষ্ঠানপ্রধান, উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার এবং জেলা শিক্ষা অফিসার— সবাই দায়ী হবেন।
নীতিমালায় বেতন-ভাতা স্থগিত, কর্তন, বাতিল ও পুনঃছাড়-সংক্রান্ত বিষয়ও কঠোরভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি কোনো শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠান আবশ্যকীয় শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয় বা এমপিওর শর্ত ভঙ্গ করে, তাহলে তাদের সরকারি অংশের বেতন-ভাতা স্থগিত বা বাতিল করা যাবে। সরকারের নির্দেশনা অনুসারে হিসাব রক্ষণ, অডিট, পিপিআর মেনে ব্যয় সম্পন্ন করা বা প্রশাসনিক নির্দেশনা পালন করতে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের বেতন-ভাতা স্থগিত বা বাতিল হবে। এমনকি পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণা করার ক্ষমতাও সরকারের রয়েছে।
এছাড়া মিথ্যা তথ্য প্রদান, অবৈধ নিয়োগ, ভূয়া শাখা দেখানো, মিথ্যা শিক্ষার্থী প্রদর্শন, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন, পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা অমান্য, নৈতিক স্খলন বা মন্ত্রণালয়ের আপিল কমিটির সিদ্ধান্ত অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানের বেতন-ভাতা বাতিল বা স্থগিত করা হবে।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply