অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা স্থানীয় এক নতুন প্রজাতির মৌমাছি শনাক্ত করেছেন। এদের মাথার দিকে ছোট ছোট শিং রয়েছে। আর এ কারণেই বিজ্ঞানীরা এর অদ্ভুত এক নাম দিয়েছেন—মেগাকাইলি লুসিফার।
গবেষকরা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার গোল্ডফিল্ডস অঞ্চলের ব্রেমার রেঞ্জেসে জন্মানো একটি বিরল বনফুল পর্যবেক্ষণ করছিলেন। অঞ্চলটি পার্থ থেকে প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার (২৯২ মাইল) পূর্বে অবস্থিত।
নতুন আবিষ্কৃত মৌমাছির 'অত্যন্ত আলাদা ও চোখে পড়ার মতো শিংগুলো' শুধু স্ত্রী প্রজাতির ক্ষেত্রে দেখা যায়। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এগুলো হয়তো আত্মরক্ষা ব্যবস্থার কাজ করে, পরাগ বা নেকটার সংগ্রহে সাহায্য করে, অথবা বাসা তৈরির জন্য রেজিনের মতো পদার্থ জড়ো করতে ব্যবহৃত হয়।
গবেষক দলের প্রধান বিজ্ঞানী বলেন, নেটফ্লিক্সে তিনি লুসিফার নামে একটি শো দেখছিলেন। সেই নামেই এই মৌমাছির নামকরণ করেছেন। তিনি আরও জানান, এটি এই মৌমাছি দলের প্রথম নতুন সদস্য, যা গত ২০ বছরের মধ্যে আবিষ্কৃত হলো।
কার্টিন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কিট প্রেন্ডারগাস্ট বলেন, এই মৌমাছির মুখে ছোট ছোট অদ্ভুত শিং ছিল।
তিনি বলেন, নতুন প্রজাতির বিবরণ লেখার সময় আমি নেটফ্লিক্সের 'লুসিফার' নামে একটি শো দেখছিলাম, আর নামটি একেবারেই মানিয়ে গেল। আমি নেটফ্লিক্সের চরিত্র লুসিফারেরও বড় ফ্যান, তাই নাম নির্বাচন সহজ ছিল।
প্রেন্ডারগাস্ট আরও বলেন, লুসিফারের লাতিন অর্থ 'আলোর বাহক বা আলো আনয়নকারী'। এটি নতুন প্রজাতির মৌমাছি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা এবং বিপন্ন উদ্ভিদের পরাগায়ন প্রক্রিয়া বোঝার গুরুত্বকে তুলে ধরার প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি জার্নাল অব হাইমেনোপটেরা রিসার্চে প্রকাশিত হয়েছে। এতে নতুন প্রজাতির মৌমাছি ও বিরল বনফুল প্রাপ্তির এলাকাটিকে 'সংরক্ষিত এলাকা' ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মৌমাছির নতুন প্রজাতিটি বিপন্ন বনফুলের সঙ্গে একই ছোট এলাকায় পাওয়া গেছে। তারা উভয়ই আবাসস্থল ক্ষয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো হুমকির মুখে থাকতে পারে। অনেক মাইনিং কোম্পানি তাদের কার্যক্রমের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের সময় স্থানীয় মৌমাছিকে অন্তর্ভুক্ত করে না।
সেই কারণে আমরা হয়তো এমন অনেক প্রজাতিকে শনাক্ত করতে পারিনি, যেগুলো বিপন্ন উদ্ভিদ ও বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
'যদি আমরা না জানি স্থানীয় প্রজাতির কোন কোন মৌমাছি আছে এবং তারা কোন উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল, তাহলে আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা হারিয়ে যেতে পারে।'
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply