রোজায় ডায়াবেটিক রোগীদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। খাবার খাওয়া ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হয়। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে সুগার ফল করতে পারে। আবার ইফতারের পর অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।
তাই রমজানে কী খাবেন, আর কী খাবেন না, তা নিয়ে অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। এ রোগের সঙ্গে যদি আরও কোনো জটিলতা থাকে তাহলে শারীরিক অবস্থা বুঝে পুষ্টিবিদের পরামর্শে খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করা জরুরি। রমজানে সঠিক খাবার ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন, পুষ্টিবিদ, টাঙ্গাইল ডায়াবেটিক হাসপাতাল।
রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যাভ্যাস কেমন হবে :-
প্রথমত, ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখতে হলে তার তিন মাসে আগে থেকে সুগার কন্ট্রোল থাকা উচিত। নইলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর যাদের সুগার কন্ট্রোল থাকে তারা নিয়ম মেনে রোজা রাখতে পারবেন। সাধারণত ডায়াবেটিস রোগীদের দিনে ছয় বেলা খাবার গ্রহণ করতে বলা থাকলেও রমজানে খাওয়ার সময় পাওয়া যাবে তিন বেলা। তাই এখানে একটি বেলার খাবার বেশি খাবেন আর একটি বেলার খাবার খাবেন না রমজানে তা ভুলেও করা যাবে না। এতে সুগার লেবেল ইমব্যালেন্স হয়ে যেতে পারে। এ জন্য প্রতি বেলার খাবার সময়মতো অল্প অল্প করে খেতে হবে।
রোজায় ডায়াবেটিক রোগীদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। খাবার খাওয়া ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হয়। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে সুগার ফল করতে পারে। আবার ইফতারের পর অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে নানা জটিলতা দেখা দেয়।
সাধারণত সারা দিন রোজা রাখার পর শরীরে পানিশূন্যতা থাকে বেশি। এ জন্য একেবারে বেশি পরিমাণে পানি পান করা যাবে না, বিশেষ করে শরবতজাতীয় ঘন পানীয়। এটি শরীরে শোষিত হতে বেশি সময় লাগে যা হজমে বিঘ্ন ঘটায়। এ জন্য পাতলা করে শরবত খেতে হবে। এ ছাড়া ইফতারে পানিশূন্যতা এড়াতে ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন ডাবের পানি, ইসবগুলের ভুসির শরবত, তোকমা, টক দইয়ের লাচ্ছি, চিনি ছাড়া লেবুর শরবত, কাঁচা আমের জুস ইত্যাদি। যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে তারা প্রথমে টকজাতীয় শরবত না খেয়ে সবজির স্যুপ বা সবজির জুস করে খেতে পারেন।
এ ছাড়া ইফতারের খাবার হতে হবে সকালের নাশতার সমান, যা সারা দিনের মোট খাবারের ৩ ভাগের ১ ভাগ। এ জন্য কয়েকটি স্বাস্থ্যকর খাবার হলো কাঁচা ছোলা সেদ্ধ সঙ্গে আদা, টমেটো, পুদিনা ও অল্প লবণ মিশিয়ে মুড়ি মাখানো। আরও খেতে পারেন দই-চিড়া, দই–বড়া, নরম খিচুড়ি, লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত, শসার রায়তা, ডিম সেদ্ধ, সাবুদানা মেশানো স্যুপ, মিক্সড ফল বা ফলের সালাদ যেকোনো একটি। তবে অবশ্যই ডালের তৈরি খাবার একের অধিক খাবেন না। যেমন ডালের বড়া, ঘুগনি, খিচুড়ি, হালিম, চটপটি এগুলোর যেকোনো একটি খাবার খেতে হবে।
কলা, আপেল, খেজুর, কমলা, আম, আপেল, নাশপাতি, পেয়ারা, পেঁপে ইত্যাদি মিষ্টি ফলের মধ্যে যেকোনো একটি ফল খেতে পারবেন। তবে টক ফল ইচ্ছামতো খাওয়া যাবে। পাশাপাশি ইফতারে ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত ও মসলাদার খাবার বর্জন করতে হবে। কারণ, এতে অ্যাসিডিটি, বুক জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
রাতের খাবার
ইফতারের পরেই রাতের সময়কাল খুব অল্প। অনেকে ইফতারে বেশি খাবার খেয়ে রাতের খাবার বাদ দেন। এটি একেবারে ঠিক নয়। রাতের খাবারে হালকা কিছু খেতে পারেন। হালকা মসলায় রান্না করা ছোট মাছ, মুরগি, মাংস, সবজি, ডাল, শিমের বিচি, সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন। এ ছাড়া লাল আটার রুটি, চিড়া, মুড়ি, খই, ওটস, যেকোনো একটি পরিমাণমতো খেতে পারেন। অবশ্যই ভুনা করা খাবার থেকে বিরত থাকবেন।
সাহ্রির খাবার
সাহ্রির খাবারটি খাওয়া হয় রাতের শেষ প্রহরের দিকে। এ জন্য অনেকে পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার সময় পান না। এ জন্য প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে মাছ, মুরগি, ডিম বেছে নিতে পারেন। গরুর মাংস, ডাল না খাওয়াই ভালো। কারণ, এগুলো পানির চাহিদা বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া যাদের আগে থেকে হজমজনিত সমস্যা আছে তারা ডাল, মাংস এ সময় এড়িয়ে চলবেন। আবার এ সময় দুধ খেলে ডাল খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
যা করবেন
অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও মসলাযুক্ত খাবারগুলো পরিহার করা।
এক দিনে সব আইটেম না খেয়ে এক দিন পরপর একটি করে আইটেম রান্না করুন।
এক খাবার ফ্রিজে রেখে অনেক দিন ধরে খাবেন না।
সারা দিন রোজা রাখলে এমনিতেই পানিশূন্যতা থাকে বেশি। এ জন্য বেশি করে চা–কফি খাবেন না। এতে আরও শরীর পানিশূন্যতায় ভুগবে।
ভুনা খাবার পরিহার করে তরল বা পানিজাতীয় খাবার বেশি খান।
যাদের ডায়াবেটিসের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিড বা বাতজনিত সমস্যা আছে তাঁদের বেসন ও ডালের তৈরি খাবার কম খেতে হবে কিংবা কারও ক্ষেত্রে বন্ধ করতে হতে পারে। এ জন্য পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
যাদের ডায়াবেটিসের সঙ্গে প্রেশার আছে তাঁরা বাইরের কেনা সব ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবার, মুড়ি, সামুদ্রিক মাছ, গরুর মাংস বা চপ খাবেন না।
যাদের ওজন বেশি ও হৃদ্রোগ আছে তাঁরা ইফতার ও সাহ্রিতে ডুবো তেলে ভাজা খাবার ও ছাঁকা তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলবেন। যেমন আলুর চপ, বেগুনি, আলুর পুরি, ডালের বড়া ইত্যাদি। এসব খাবারে ভিটামিন ও মিনারেলের পরিমাণ কম থাকে। এ ছাড়া ছাঁকা তেল পরে ট্রান্সফ্যাট হয়, যা অ্যালডিহাইড নামে জৈব রাসায়নিক প্রভাবে বিভিন্ন জটিল রোগ হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।
অতিরিক্ত ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন। এসব খাবার অ্যাসিডিটির পরিমাণ বাড়িয়ে তো
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply