ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢলে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে নদী ও হাওরে পানির প্রবাহ আরও বেড়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাহিরপুর উপজেলা।
তাহিরপুর উপজেলায় রাস্তাঘাট ও বাড়িঘরে বেশি পানি উঠেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করেছে প্রশাসন।
জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, শহরের ষোলঘর পয়েন্টে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ৮ দশমিক ১৩ মিটার, যা বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপরে। গতকাল সোমবার একই সময়ে সেখানে পানি ছিল বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচে। এই ২৪ ঘণ্টায় সেখানে পানি বেড়েছে ৪৪ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া সুরমা নদীর পানি জেলার ছাতকে বিপৎসীমার ওপরে আছে।
তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক তিন দিন ধরে বিচ্ছিন্ন আছে। উজানের ঢলে গতকাল আবারও জেলা সদর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্লাবিত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সুরমা নদীর তীরবর্তী রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢোকায় দুর্ভোগে পড়েছেন তাঁরা। পৌর শহরের লঞ্চঘাট, জলিলপুর, মল্লিকপুর, উত্তর আরপিননগর, তেঘরিয়া, নবীনগর, ওয়েজখালী, মল্লিকপুর ও বড়পাড়া এলাকায় সুরমা নদীর পারি তীর উপচে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘরে প্রবেশ করেছে। গতকাল রাতের ভারী বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে বেশি।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত জানান, শহরে নদী ও হাওরতীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকছে। এসব এলাকায় রাস্তাঘাট, দোকানপাট ও বাড়িঘরে পানি আছে। বন্যার আশঙ্কায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সুনামগঞ্জ ও এর উজানে ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ার কারণেই পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। মূলত উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢল নামে। এতে সুনামগঞ্জে নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গতকাল দিন ও রাতের বৃষ্টিতে পানি আরও বেড়েছে। একই সঙ্গে উজানের ঢলও থেমে নেই।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply