বাবার জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলেন ছেলে মো: সুমন মিয়া। সে সময়ে তার ছেলে ইয়াসিন (৭) বায়না ধরে দাদা'কে দেখতে যাবে। বাধ্য হয়েই সন্তানকে সাথে নিয়েই যান তিনি। সেখানে দাদা মফিজুল ইসলামসহ ভুনা খিচুড়ি পিঠা খেয়ে বিদায় নিয়ে তারা ফিরছিলেন বাসার উদ্দেশে।
বাসে উঠার জন্য ছেলে হাতে ধরে খিলক্ষেত বাজার সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের পাশে যাত্রীছাউনি নিচে অপেক্ষা করছিলেন।
সে সময়ে একটি ল্যান্ডক্রুজার জিপ তুলে দেয় তাদেরসহ উপস্থিত লোকজনের ওপর। এরপর কি হয়েছে, তা আর জানা নেই সুমনের।
তার স্বজনরা জানিয়েছেন, ইয়াসিন মারা গেছে তা সুমনকে জানানো হয়নি। সুমন ছেলের কথা জানতে চাইলে বলা হয় ইয়াসিন বাসায় আছে।
ঘটনার সময়ে সেখানে তারা বাবা ছেলে ও নারীসহ চার জন আহত হয়।
খিলক্ষেত থানার পুলিশ জানিয়েছেন ঘটনাস্থলেই শিশু ইয়াসিন প্রাণ হারায়।
বাকিদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় কুর্মিটোলা হাসপাতাল নিয়ে যান।
সেখান থেকে রাত এগারোটায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে উজ্জ্বল পান্ডে (২৬) নামে এক জনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে একটায় আরমিনা হককে (৩৪) মৃত ঘোষণা করা হয়।
শিশু ইয়াসিনের বাবা সুমন ক্যাজুয়ালটি ব্লকের অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, সুমনের বাবাসহ স্বজনরা তার পাশে আছেন।
সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুমনের মাল্টিপল ইনজুরি রয়েছে। হাত পায়ের বিভিন্ন স্থানে ফ্যাকচার রয়েছে।
তার রক্তের প্রয়োজন, আমরা দেয়ার জন্য বলেছি। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক। তাকে আইসিইউতে নেয়ার জন্যও কল করা হয়েছে। তার স্বজনদের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলাম এর ছেলে সুমন।
ইয়াসিন ছিল সুমনের একমাত্র সন্তান। তিনি মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশে স্ত্রী শিখাকে নিয়ে থাকেন।
খিলক্ষেত নামাপাড়া এলাকায় থাকেন সুমনের বাবা, তিনি নিরাপত্তা কর্মীর কাজ করেন। সুমনরা চার ভাই, তিনি সবার বড়।
খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাবরিনা রহমান মৌরি জানিয়েছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দের পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে স্বজদের কাছে মরদেহ গুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply