প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে। চিকিৎসা খাতও এখন এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ডিজিটালাইজেশনের কারণে স্বাস্থ্যসেবা খাতে সাইবার হামলার ঝুঁকিও বাড়ছে। এজন্য সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।হাসপাতালের বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে রোগীর সেবা, মেডিকেল রেকর্ড সংরক্ষণ, ডায়াগনস্টিকসসহ বিভিন্ন খাতে প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহৃত হচ্ছে। সার্বিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করার কারণে সাইবার হামলার সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
আমেরিকান হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের সাইবার সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জন রিগি জানান, ইন্টারনেট যুক্ত প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে হাসপাতালগুলোয় বড় ধরনের সাইবার হামলার ঝুঁকি বেড়েছে। এছাড়া হাসপাতালের নেটওয়ার্কগুলোয় হ্যাকারদের অনুপ্রবেশের সুযোগ বেড়েছে। ফলে সাইবার অপরাধীরা প্রায়ই গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডাটা এনক্রিপ্ট করে ফেলে। পরবর্তী সময়ে ডাটা পুনরুদ্ধারের বিনিময়ে র্যানসম বা মুক্তিপণ দাবি করছে। এতে জরুরি পরিষেবা, অস্ত্রোপচার, ভর্তি এবং অন্যান্য জরুরি সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সাইবার র্যানসমওয়্যার হামলায় বেশকিছু হাসপাতাল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার পর কিছু হাসপাতাল তাদের জরুরি পরিষেবা বন্ধ, অস্ত্রোপচার ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত এবং রোগীদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। পাশাপাশি কয়েকটি হাসপাতাল ও ক্লিনিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জানান, এ সাইবার হামলাগুলো প্রায়ই রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরানের মতো দেশগুলো থেকে পরিচালিত হয়ে থাকে।
সর্বশেষ সাইবার হামলার শিকার হয়েছে শিকাগোর অ্যান অ্যান্ড রবার্ট এইচ লুরি চিলড্রেনস হসপিটাল। হামলার কারণে হাসপাতালের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি রোগীদের ডিজিটাল মেডিকেল রেকর্ড অ্যাকসেস বন্ধ করা হয়েছিল। এফবিআই বর্তমানে হামলার বিষয়ে তদন্ত করছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা হাসপাতালগুলোকে তাদের নেটওয়ার্ক লক করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে সাইবার নিরাপত্তা ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, হাসপাতালে র্যানসমওয়্যার হামলার হার সম্প্রতি বেড়েছে। সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম এমসিসফটের ব্রেট ক্যালো জানান, গত বছর স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৪৬টি সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে আগের বছর ২৫টি হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময়ে হ্যাকারদের মুক্তিপণের দাবিও বেড়েছে। ২০১৮ সালে ৫ হাজার ডলার মুক্তিপণ থেকে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ ডলারেরও বেশি মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে।
ব্রেট ক্যালো আরো জানান, এসব হামলা প্রতিরোধে সরকারগুলোকে আরো সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন হাসপাতাল, স্থানীয় সরকার ও স্কুলগুলোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে র্যানসম বা মুক্তিপণ প্রদান নিষিদ্ধ করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হবে। এসব সাইবার হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস (এইচএইচএস) স্বাস্থ্যসেবা শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্য হেলথ ইন্স্যুরেন্স পোর্টেবিলিটি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি ফেডারেল আইন এবং সাইবার সিকিউরিটি বিধিমালা আপডেট করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
নেটওয়ার্কজুড়ে রোগীদের চিকিৎসা তথ্য সুরক্ষিত রাখাই এর লক্ষ্য। পাশাপাশি দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করে হাসপাতাল সিস্টেমগুলোকে শক্তিশালী করা।
Share On:
6 Comments
GSShwXQAsn
April 11, 2025 at 9:47pmGSShwXQAsn
April 11, 2025 at 9:47pmzmFQyJyNdlYw
April 29, 2025 at 12:18pmzmFQyJyNdlYw
April 29, 2025 at 12:18pmlpHuVyxJ
May 08, 2025 at 7:51pmlpHuVyxJ
May 08, 2025 at 7:51pmLeave A Reply