ইসরাইলের সেনাবাহিনী বর্তমানে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মানবসম্পদ সংকটের মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির রিজার্ভ জেনারেল ও সামরিক বিশ্লেষক ইৎজাক ব্রিক। তার মতে, সামরিক বাহিনীতে তীব্র কর্মী ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
দৈনিক মারিভ পত্রিকায় লেখা এক মতামত কলামে ব্রিক বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হাজার হাজার অফিসার ও নন-কমিশনড অফিসার (এনসিও) সেনা সেবার ডাকে সাড়া দেননি বা বা তাদের চুক্তি নবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ইসরাইলের সামরিক সূত্র ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে গাজার গণহত্যা যুদ্ধে ৯২৩ ইসরাইলি সেনা নিহত ও ৬ হাজার ৩৯৯ জন আহত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২০ হাজার সেনা পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেসে (এক ধরনের মানসিক রোগ) ভুগছেন।
দেশটিতে কঠোর সামরিক সেন্সরের মধ্যে সেনাবাহিনীর ক্ষতির পরিমাণ কম দেখানোর অভিযোগ আছে, যাতে করে সেনাদের মনোবল ধরে রাখা যায়।
ব্রিক লিখেছেন, অনেক অফিসার তৎক্ষণাৎ অবসর চান এবং তরুণ নতুন সেনারা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করছেন। ফলত পুরো সেনাবাহিনীতে ব্যাপক কর্মী সংকট তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনবলেরও এই হঠাৎ পতন সরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণ এবং যুদ্ধে ব্যবহৃত সিস্টেম পরিচালনায় সমস্যা সৃষ্টি করছে।
সেনা বিশ্লেষক সতর্ক করে বলেন, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে শিগগিরই সেনাবাহিনী ‘সম্পূর্ণ অচল অবস্থায় চলে’ যেতে পারে।
ব্রিক ইসরাইলের সেনাবাহিনীর ক্রমাগত মানবসম্পদ সংকটের জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নেয়া ‘ভুল সিদ্ধান্ত’কে দায়ী করেছেন। তার মতে, ব্যাপক হারে কর্মী কমানো এবং স্বল্পকালীন সেবার মেয়াদ—পুরুষদের জন্য তিন বছর, নারীদের জন্য দুই বছর, এসব সিদ্ধান্ত বড় শূন্যতা তৈরি করেছে, যা দ্রুত পূরণ করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের গণহত্যায় ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply