ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার ভাষায়, শান্তির পদক্ষেপে ইউরোপ যদি বাধা দেয়, তাহলে ইউক্রেনের আরও জমি দখল করবে মস্কো।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বার্ষিক সভায় পুতিন এ হুঁশিয়ারি দেন
ইউরোপের নেতাদের ‘শূকরছানা’ বলে কটাক্ষ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, কিয়েভ আর তার সমর্থকরা যদি যুক্তরোষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাবে অংশ না নেয়, তা হলে ইউক্রেনের আরও জমি দখল করে নেবেন তিনি।
সভায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতিকে পশ্চিমাদের পাগলামি হিসেবে আখ্যা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি জানান, ইউক্রেন যুদ্ধে কূটনৈতিক সমাধান না এলে সামরিক পথেই লক্ষ্য পূরণ করা হবে।
পুতিন দাবি করেন, মস্কো কূটনীতির মাধ্যমে যুদ্ধের মূল সমস্যার সমাধান করতে চায়। তার ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন ইস্যুতে শান্তি আলোচনায় প্রস্তুত রয়েছে। তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে কূটনীতির মধ্য দিয়ে সমাধান না আসলে সামরিক পথেই লক্ষ্য পূরণ করা হবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন,
পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে এসেছে রাশিয়া। তবে, সেই সুযোগগুলো কাজে লাগানো হয়নি। আর এর সম্পূর্ণ দায় ইউরোপীয়দের। তারা ভেবেছিল শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে কথা বলা যাবে। আজও আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক লাভজনক ও সমান ভিত্তির সহযোগিতার পক্ষে আছি।
এরমধ্যেই ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান আলোচনার ফল দেখেই বোঝা যাবে যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সত্যিই শান্তি চান কি না।
এদিকে, স্থানীয় সময় বুধবার এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপীয় মিত্রদের কিয়েভের পাশে শক্তভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তার ভাষায়, ইউরোপীয় নেতাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে রাশিয়া বুঝে যায় আগামী বছর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কোনো অর্থ নেই।
ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়ন নিয়ে বড় সিদ্ধান্তের পথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপে জব্দ করা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ২১ হাজার কোটি ইউরো সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে সহায়তার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। যদিও বেলজিয়াম, ইতালি ও কয়েকটি দেশ আইনি জটিলতা নিয়ে আপত্তি তুলেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জানান, আগামী দুই বছরের জন্য ইউক্রেনকে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এরমধ্যেই, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়ার গ্যাস আমদানি পুরোপুরি বন্ধের পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে। একই সঙ্গে রুশ তেল আমদানিও ধাপে ধাপে বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইইউ।
Share On:
0 Comments
No Comment YetLeave A Reply